Saturday , July 27 2024
Breaking News

প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের লোভে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রটি, গ্রেপ্তার ৪

মো: সোলায়মান : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রমনা বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কথিত সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন লোভনীয় অফারে ক্রয়-বিক্রয়ে প্রলুব্ধ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে । চক্রটি টার্গেট করতো শিল্পপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের।

গ্রেপ্তারাহলেন: মো. মিজানুর রহমান মজনু, মো.আক্তারুজ্জামান ওরফে তাহেরুল ইসলাম, মো. জসিম ও ইব্রাহিম ব্যাপারি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি কথিত ব্রিটিশ সীমানা পিলার, ৪টি কথিত প্রাচীন কয়েন, নগদ ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ৪টি মোবাইল ফোন, ১টি চুক্তিপত্র, ৩২টি চেক, ভুয়া ভিজিটিং কার্ড ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, রমনা মডেল থানায় এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় তদন্তে বেরিয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। মামলাটি তদন্তকালে দেখা যায় প্রতারক চক্রটির মূল টার্গেট হচ্ছে নতুন শিল্পপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদেরকে কথিত প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন ক্রয়-বিক্রয়ের লোভে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রটি।

সীমানা পিলারের কথা বলে ভিকটিমকে ফাঁদে ফেলার বিষয়ে জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ভিকটিমের সাথে আসামি তাহেরুল ইসলামের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে আমেরিকার হেরিটেজ অকশন নামে একটি কোম্পানির বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে পরিচয় দেন। তাহেরুলের শারিরীক গঠন, পোশাক, দামি গাড়ি ও স্মার্টনেস দেখে ভিকটিম তাকে বিশ্বাস করে এবং তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই পরিচয়ের সুবাদে তাহেরুল ভিকটিমকে বলে তার গ্রামের একজন সহজ সরল কৃষক মিজানুর বাড়ির পাশে কৃষি জমি খনন করার সময় একটি সীমানা পিলার পেয়েছেন। তাহেরুল ভিকটিমকে বলে তিনি যেহেতু আমেরিকার একটি কোম্পানির কান্ট্রি ডিরেক্টর এই পিলারটি দুইশত কোটি টাকার বিনিময়ে আমেরিকান কোম্পানির মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। তিনি ভিকটিমকে শেয়ারে থাকার জন্য অফার দেন। তার প্রস্তাবে ভিকটিম রাজী হয় এবং তাহেরুলের সাথে সেই কৃষকের বাড়ি যায় পিলারটি দেখতে। এইদিকে তাহেরুল তার সহকারী জসিমকে কেমিস্ট সাজিয়ে নিয়ে যায় এবং তাকে দিয়ে পিলারটির রাসায়নিক পরীক্ষা করায়। জসিম সবকিছু দেখে পিলারটি খাঁটি বলে জানায়। এর ফলে তাহেরুলের কথা ভিকটিমের আরো বিশ্বাস হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার আরো বলেন, ভিকটিম তখন মিজানুর রহমানের সাথে সীমানা পিলারটি ৩৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ক্রয় করার চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক নগদ ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু প্রতারকদের পূর্বপরিকলম্পনা অনুযায়ী কথিত সীমানা পিলারটি ভিকটিমের কাছে হস্তান্তর করার কিছুক্ষণ পরেই তাদের লোকজন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে যায়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, আসামিরা জানায় এ চক্রে ২০ থেকে ২৫ জন লোক কাজ করে। প্রতারণায় তাদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে। প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

কেউ যদি এ ধরণের প্রতারণার শিকার হন তাহলে সাথে সাথে নিকটস্থ থানাকে অবহিত করবেন। লোভে পড়ে এ ধরণের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এছাড়াও

“অভিভাবকহীন সন্তানদের থেকে রাষ্ট্রও যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে”

সাঈদুর রহমান রিমন: বৈষম্যের মাধ্যমে সৃষ্ট বঞ্চনা, নিপীড়নের ‘কোটা বিরোধী’ যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *