Saturday , July 27 2024
Breaking News

ভোটের তারিখ ছাড়া আরও যা থাকে তফসিলে

শেষবার্তা ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ বাকি আছে হাতে গোনা কিছুদিন। এজন্য ইতোমধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। স্পষ্ট করে বললে, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি শেষ হবে এই মেয়াদ। দেশের সংবিধান অনুযায়ী এরমধ্যেই আয়োজন করতে হবে সংসদ নির্বাচন।  ইঙ্গিত পাওয়া গেছে তফসিল ঘোষণার তারিখ নিয়েও। দেশের গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন উঠেছে আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তফসিল মানে শুধুই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নাকি আরও কিছু থাকে এর সাথে?

আজ সন্ধ্যায় ঘোষণা হতে পারে নির্বাচনী তফসিল। ভোটগ্রহণ হতে পারে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তফসিল থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের হাতে সময় থাকবে ৫০ দিনের মতো। এরমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়ে থাকে প্রার্থীদের।

কী থাকে নির্বাচনের তফসিলে?

এম সাখাওয়াত হোসেন। সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সহজ ভাষায় এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখের একটি আইনি ঘোষণা। নির্বাচন আয়োজনে যেসব কাজকর্ম জড়িত তার সবকিছুর সময় বেঁধে দেওয়া।

তফসিলে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র কত তারিখ জমা দেওয়া শুরু করতে পারবেন সেটি ঘোষণা করা হয়। এরপর মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন কতদিনে মধ্যে বাছাই করবে, বাছাই প্রক্রিয়ায় যদি সেটি বাতিল হয়ে যায়, তাহলে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ব্যক্তি কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে তার সময় বেঁধে দেয় কমিশন।

যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনী প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে আর কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে – সেটির উল্লেখ থাকে।

সাধারণত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতীক ঘোষণার সাথে প্রচারণা শুরুর তারিখ সম্পর্কিত থাকে। নির্বাচন কত তারিখ হবে, কোন সময়ে শুরু হবে আর কোন সময় পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে তার বিস্তারিত এবং ভোটের পর ভোট গণনা কীভাবে এবং কোথায় হবে তারও পরিষ্কার উল্লেখ থাকে। এই পুরো বিষয়টিকেই নির্বাচনের তফসিল বলা হয়।

সিদ্ধান্ত নেয় কারা?

মূলত উল্লেখিত বিষয়গুলো সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে। ফলে এসব সিদ্ধান্ত আলাদাভাবে নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। এরমধ্যে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে সেটি নিয়ে এবং নির্বাচনের তফসিলের অন্যান্য সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর বেশিরভাগ কমিশনার যে সিদ্ধান্ত দেয় সেটিই গৃহীত হয়।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে সেটি বদলানো যায়?

ইসি চাইলে সংসদ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে দেওয়া নির্বাচনের তারিখ বদলাতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচনের তারিখ বদলানোর এখতিয়ার রয়েছে সংস্থাটির। সেক্ষেত্রে তফসিল সংশোধন করে দেওয়া যায়। এছাড়া এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য তারিখ পরিবর্তন করতে পারে ইসি।

একটি উদাহরণ দিয়ে ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০০৮ সালে ড. এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ নির্বাচনের তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি তখনো নির্বাচনে আসবে কিনা সেনিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছিল। এরপর দলটির সাথে আলোচনা হলে তাদের দাবির ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে ২৯ ডিসেম্বর করা হয়েছিল।

সেসময় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করার অনুরোধ জানিয়েছিল।

২০০৬ সালে একবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক সংকটের মুখে নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের তারিখটি রয়ে গিয়েছিল। সেই তারিখ পরে বাতিল করেছিল আদালত।

আর কোনো দেশে নির্বাচনী তফসিল দেওয়া হয়?

রেওয়াজ অনুযায়ী, বাংলাদেশের তফসিলে যেসব কার্যক্রম থাকে তার জন্য সব মিলিয়ে সময় থাকে ৪৫ দিন।

ব্রিটেনে তফসিলের সময়কাল দেওয়া হয় সব মিলিয়ে ১৭ দিন। অর্থাৎ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ১৭ দিনের মধ্যে নির্বাচনসহ তার আগের সবকিছু শেষ করতে হবে। দেশটিতে আইন করে স্থায়ী একটি তফসিল তৈরি করা রয়েছে। তবে দেশটিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আয়োজন করেন না। স্থানীয় কউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, বিলুপ্ত হওয়া লোকসভা বা বিধানসভার সর্বশেষ অধিবেশন থেকে নতুন সরকার গঠনের মধ্যে সময়সীমা ছয় মাসের বেশি হতে পারবে না। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী আট দিনের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়। এরপর বাছাইয়ের জন্য এক দিন বরাদ্দ থাকে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য দু‘দিন বরাদ্দ থাকে। এরপরে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণায় সাধারণত দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়ে থাকে। তবে নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচারণা বন্ধ করতে হয় দেশটিতে।

পাকিস্তানে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, বাছাই, প্রচারণায় সবমিলিয়ে ৫৪ দিনের মতো সময় পাওয়া যায়। ভারতের মতো এখানেও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বাছাই, প্রত্যাহারের সময় পার হওয়ার পর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর অন্তত ২২ দিন পরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়াও

শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে যৌনদাসের ব্যবসা, আয় শতকোটি

শেষবার্তা ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতন চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *