শেষবার্তা ডেস্ক : শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় সদস্য এপিবিএন এ বদলি হওয়া ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের অপরাধের দায় বাহিনী নিবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি যুগ্ম কমিশনার (অপারেশসনস) বিপ্লব কুমার সরকার।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডিএমপির সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে তিনি এ কথা বলেন।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি টিম ডিএমপি কমিশনার স্যারের সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন। সরাসরি একজন ভুক্তভোগীও আসছিলেন। তারা তাদের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাদের বেশকিছু দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, কমিশনার স্যার ছাত্রলীগকে জানায়, বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত পেশাদার একটি সংস্থা। ব্যক্তির দায় বাংলাদেশ পুলিশ বহন করবে ন। এটি একদম পরিস্কার কথা। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি যখন সবার নজরে আসছে তখন তাৎক্ষনিকভাবে কমিশনার স্যার তাকে (এডিসি হারুন) রমনা থেকে সরিয়েছেন। পরবর্তীতে আইজিপি স্যার ডিএমপি থেকে বদলি করে তাকে এপিবিএনে বদলি করেন। এছাড়া ডিএমপি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটিকে ডিএমপি কমিশনার স্যার বলেছেন, একেবারেই নিরপেক্ষ এবং কারো প্রতি পক্ষ-পাতিত্ব না করে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে পুলিশের সর্বোচ্চ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পর্যায়ের যেকেউ জড়িত থাকুক যার যতটুকু দায় দায়িত্ব রয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কমিশনার স্যার আস্বস্ত করেছেন।
ছাত্রলীগ মামলার বিষয়ে কথা বলেছে কিনা জানতে চাইলে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, এ বিষয়ে কথা হয়নি। যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনকানুন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুধু এডিসি হারুনই নয় ভুক্তভোগীর দাবি তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন পুলিশ থানায় তাকে মারধর করেছে। প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, একশো পার্সেন্ট নিশ্চিত থাকেন যারা জড়িত ছিল সবার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন জড়িত নাকি পাঁচ-দশজন জড়িত তদন্ত কমিটি যাকে যতটুকু দায়ী করবে তার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা কি জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, দুই ধরনের দণ্ড রয়েছে। একটি লঘুদণ্ড অন্যটি গুরুদণ্ড। লঘুদণ্ডের মধ্যে চারটি বিষয় রয়েছে, গুরুদণ্ডের মধ্যে চারটি বিষয় রয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে কাকে কতটুকু দায়ী করবে তার ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ চাকরিচ্যুত হতে পারে কেউবা তিরস্কারও হতে পারে।
এর আগে, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইমকে নির্যাতন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ। এ ঘটনায় রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এডিসি হারুনকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে।