Saturday , July 27 2024
Breaking News

ডলার পার্সেলের নামে ভয়াবহ প্রতারণা করে তারা

নিজস্ব প্রতিনিধি : ফেসবুক ঘেঁটে টার্গেট করা হয় সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। প্রথমে তাদের সঙ্গে সখ্য ও পরিচয় গড়ে তোলা হয়। এরপর বলা হয়- আমি অমুক, আমেরিকায় থাকি। আপনার মাধ্যমে দেশে দুস্থ ও অস্বচ্ছল মানুষদের সাহায্য পাঠাতে চাই। দেশে থাকা সেই উচ্চপদস্থ ব্যক্তির ফোন নাম্বার নিয়ে তার হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমুতে কথা বলা হতো। শেষে তাকে ডলার পার্সেল করার কথা বলে কাস্টম চার্জ, ব্যাংক সার্ভিসসহ নানা কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হতো লাখ লাখ টাকা।

এভাবেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল একটি বিশাল চক্র। অবশেষে সেই চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মো. রাজু (৩২), হাসান (৩২), মোতালেব (৪০), সোহাগ (৩০) ও সনিয়া আক্তার মিষ্টি (১৬)।

সোমবার (১০ এপ্রিল) তাদের রাজধানীর শান্তিনগর সহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩১টি চেক, এটিএম কার্ড চারটি, মোবাইল ফোন দুটি, সিম কার্ড ১৩টি ও দুটি রাবার সিল।

পুলিশ বলছে, চক্রটি মূলত দেশে থেকেই বিদেশ থেকে ডলার বা পার্সেল পাঠানোর নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে চক্রটির মূল হোতাকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের এসি বায়েজিদুর রহমান জানান, এমন একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছ। তারা মূলত পার্সেল পাঠানোর নামে টাকা হাতিয়ে নিতো। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান রমনা থানার এসআই সুবীর কুমার কর্মকার।

তিনি বলেন, চক্রটির মূল হোতা বাংলাদেশেই আছে। তবে তাকে এখনো আমরা ধরতে পারিনি। চক্রটির সেকেন্ডম্যান হিসেবে কাজ করতেন রাজু নামের ব্যক্তি। তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও আমরা আরও চারজনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের আদালতে তোলা হচ্ছে। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, চক্রটি আমেরিকা ও নাইজেরিয়ায় থাকা ব্যক্তিদের যোগসাজসে এমন কাজ করছে। তারা এ যাবত বিভিন্ন মানুষের সাথে ডলার পার্সেলে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছে। তারা বিদেশ থেকে ডলার পার্সেল খরচ, কাস্টমস খরচ, ব্যাংক সার্ভিস চার্জের নামে এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতার চক্রটির সদস্য হাসান, মোতালেব, সোহাগ ও মিষ্টি স্বল্প শিক্ষিত, কিন্তু তারা বিভিন্ন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। এরপর সেই টাকাগুলো তারা বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে রাখতেন। সেগুলো প্রতিদিন ব্যাংক বুথ থেকে তুলে রাজু নামের একজনকে বুঝিয়ে দিতেন। এভাবে কাজ করে তারা কমিশনে বেতন পেতেন।

রমনা পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ মার্চ রিতা ব্রাউন নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভুক্তভোগী মোজাম্মেল হক নামে এক ব্যক্তিকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এরপর তিনি আমেরিকায় থাকেন এবং দেশটির সেনাবাহিনীতে কর্মরত বলে জানান। কিন্তু বর্তমানে তিনি ইয়েমেনের সানায় অবস্থান করছেন। তিনি সেখানে অপারেশনে কিছু টাকা পেয়েছেন। সেই টাকার ২০ শতাংশ গরিব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতে চান। এজন্য তিনি মোজাম্মেল হককে সেই টাকা পাঠাতে চান। বাকি ৮০ শতাংশ টাকা বাংলাদেশে বেড়াতে এলে তার কাছ থেকে নিয়ে নেবেন। প্রথম দিকে মোজাম্মল হক রাজি না হলেও পরে তার কথায় বিমোহিত হয়ে সেই টাকা পাঠাতে সম্মতি দেন। এরপর তাকে ডলার পার্সেলের নাম করে বিভিন্ন চার্জের কথা বলে সাড়ে ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন রিতা ব্রাউন নামের সেই ব্যক্তি। এসব টাকা ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় গত ২৯ মার্চ রমনা থানায় মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি চক্রটির হাতে এমন প্রতারণার শিকার হয়ে প্রায় ২৭ লাখ টাকা খুইয়েছেন দাবি করে একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ।

এছাড়াও

পরিবহন সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না: আইজিপি

শেষবার্তা ডেস্ক : পশুর হাটে পরিবহন সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *