Saturday , July 27 2024
Breaking News

পোস্টার নিয়ে পাইলট প্রকল্প কাজে আসবে তো?

মোঃ সোলায়মান :

ডিএনসিসি’র পক্ষ হতে নির্দিষ্ট স্থানে পোস্টার লাগাতে বসানো বোর্ড গুলোও সঠিক ভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। বোর্ড বসানো হলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে এমনটাই মনে করেন নগর-পরিকল্পনাবিদরা ও স্থানীয় বাসিন্দা।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) ও শনিবার (২৫ মার্চ) উত্তর সিটি  করপোরেশন সরজমিন ঘুরে দেখা যায় এখনো দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে আছে পোস্টার। মোড়ে মোড়ে ঝুলছে ব্যানার। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল ও জনসমাগম স্থানে পোস্টার আর ব্যানারের ছড়াছড়ি। এসব পোস্টার আর ব্যানারের অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা মূলক পোস্টার আর ব্যানার ছিলো চোখে পড়ার মতো।

রাজধানীর কাওরান বাজার, আগারগাঁও তালতলা বাস স্ট্যান্ড ও মিরপুর-১০ নম্বর এলাকার দেওয়ালে পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে ”পোস্টার লাগানোর নির্ধারিত স্থান” লেখা সম্বলিত ১৫ টি ১৬/৬ ফিট সাইজের বোর্ড বসিয়েছে ডিএনসিসি। চলমান প্রকল্পে আরও বোর্ড বসানো হবে বলে জানানো হয় ডিএনসিসি’র পক্ষ থেকে।

তবে ডিএনসিসি’র পক্ষ হতে কিছু কিছু স্থানে পোস্টার ব্যানার অপসরণের অভিযান চালাতে দেখা যায়। এছাড়া সকল ওয়ার্ডে পোস্টার লাগানোর নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণের জন্য কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়েছে  সংস্থাটি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোন কোন স্থানে পোস্টার লাগানোর বোর্ড বসানো হয়েছে তা জানে না স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রধান সড়কের পাশে বসানো দৃশ্যমান তিনটি বোর্ডও ঢাকা পড়ে যাচ্ছে হকার ব্যবসায়ীদের দোকানের আড়ালে, কোথাও কেবল রাজনৈতিক পোস্টার লাগানো।

ওইসব এলাকার পথচারী ও বাসিন্দারা বলছেন, প্রচার প্রচারনার অভাবে ও আশপাশের দেয়ালে এলোমেলো ভাবে লাগানো পোস্টারের ভিড়ে আলাদা ভাবে দৃশ্যগোচর হচ্ছে না বোর্ড গুলো। এছাড়া হকারদের দখলদারিত্বে ফুটপাত দিয়ে জনসাধারণ চলাচল না করায় কিছু বোর্ড কোন কাজেই আসছে না।

পোস্টার লাগানোর জন্য অর্থ ব্যয় করে নির্দিষ্ট বোর্ড বসানো কার্যকর কোন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন না নগরবিদরা। তারা মনে করেন, রাজধানীতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন মার্কেট ও পোস্টার লাগানোর অনুমতি পাওয়া যায় এমন সব দেয়ালে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে ব্যবহার করা হলে সিটি করপোরেশনের কাজ যেমন সহজ হবে তেমনই সরকারি অর্থের ব্যয়ও রোধ হবে।

এবিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান জানান, পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে যত্রতত্র পোস্টার লাগানোর সমস্যা কতটুকু দূর হবে তা যাচায় করাটা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নয়। এতে সরকারি অর্থের ব্যয় বাড়বে। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের এই বোর্ড স্থাপনে সময় ব্যয় করতে হবে। বরং শহরের যে সকল দেয়াল ব্যবহার করা সম্ভব হবে তা একটি নীতিমালার মাধ্যমে ব্যবহার করার উদ্যাগ নিলে আশা করা যায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে পোস্টার সমস্যা নিরেসনে।

নির্দিষ্ট স্থানের বাহিরে যত্রতত্র পোস্টার লাগানো বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে সেখানে পোস্টার লাগানো বন্ধে শাস্তি বা জরিমানার বিধান প্রয়োগ করতে হবে। অনাথায় অর্থ খরচ করে বোর্ড বসিয়েও কোন লাভ হবে। তাই বোর্ড হোক বা দেয়াল নির্দিষ্ট স্থানের বাহিরে পোস্টার লাগালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আগারগাঁও তালতলা বাস স্ট্যান্ড এলাকার পথচারী ফিরোজ খাঁন বলেন, বাসা ভাড়ার নোটিশসহ কারও কোন কিছু প্রচার করার প্রয়োজন হলে এইখানে এসে বিজ্ঞপ্তি দিবে। কিন্তু পোস্টার লাগানোতেও সঠিক নিয়ম রাখা উচিত। এখানে কোন পোস্টারই যেন একটার বেশি না লাগানো হয় এইটা দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভ্যাট-টেক্সের টাকায় সিটি করপোরেশন পোস্টার লাগানোর পাইলট প্রকল্প চালাতে পারেনা। এটা তো এক ধরনের অপচয়। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হলে এই পাইলট প্রকল্পের গুরুত্ব কি? পোস্টার লাগানোর বিষয় সিটি করপোরেশনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

মিরপুর ১০ এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, বোর্ডে পোস্টার লাগানোর ব্যবস্থাটা ভালো হইছে। কিন্তু এত এত পোস্টার কয়টা এখানে লাগানো যাইবো। যদি নিয়ম করা হয় এর বাইরে পোস্টার লাগাইলে শাস্তি, তাইলে এই বোর্ড কাজে আসবো। পোস্টার লাগানোর বোর্ডের সংখ্যা ও বাড়াতে হবে।

একই এলাকার বাসিন্দা  মুক্তাদির হায়দার মুক্ত বলেন, দেখতেই পাচ্ছেন বোর্ড এর সামনে গাড়ি রাখা, হকাররা বসে জায়গাটা ভিড় করে রাখছে। নির্ধারিত স্থানে পোস্টার লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ভালো কথা, পাশাপাশি এই বোর্ডের যেন কোন ক্ষতি না হয়, আর এর সঠিক ব্যবহার হয় সেইটাও খেয়াল রাখতে হবে স্থানীয়দের এবং সিটি করপোরেশনের। সিটি করপোরেশনর পরিচ্ছন্ন কর্মী দ্বারা কর্মী প্রতিনিয়তই এটি পরিষ্কার করতে হবে।

ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম জানান,ওয়ার্ড কাউন্সিলদের নির্ধারণ করে দেয়া স্থানগুলো আমরা এর উপযোগিতা যাচাই করে পোস্টার লাগানো বোর্ড বসানোর জন্য সম্মতি দেই। এরপর তা দেখা শোনার দ্বায়িত্ব থাকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের।

পাইলট প্রকল্প হিসেবে এখনো পর্যাবেক্ষণের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি জানান, যেহেতু বোর্ড গুলো পরিক্ষামূলক ভাবে বসানো হচ্ছে, তাই এখনো কোন কোন স্থানে বোর্ড গুলো কার্যকর ভূমিকা রাখছে বা রাখছে না এইসব বিষয় গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, আগামীতে তা প্রয়োগ করা হবে।

এর আগে, যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করলে ২১ ফেব্রুয়ারির পর কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তবে মেয়রের আল্টিমেটামের সময় শেষ হলেও বন্ধ হয়নি অযাচিত পোস্টার-ব্যানার লাগানো।

এছাড়াও

ডাকাতির লুট আলামত উদ্ধারসহ ৪ ডাকাত গ্রেপ্তার

ঢাকা প্রতিনিধি: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার দায়ের হওয়া ডাকাতি মামলায় লুট আলামত উদ্ধারসহ চার ডাকাত সদস্যকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *