বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বার্তা ডেস্ক :
ঘুম থেকে সঠিক সময়ে ওঠা কিংবা কারও জন্ম তারিখ মনে রাখার দায়িত্ব এখন প্রযুক্তির কাঁধে।মানুষের জীবনকে নানা দিক থেকে সহজ করে তুলেছে প্রযুক্তি। এমনকি রোদ-বৃষ্টিরোধী যে ছাতা, তাতেও লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
আজকাল পথে বেরোলেও এমন কিছু ছাতা দেখা যায় যার ভেতরে লাগানো থাকে ফ্যান। এখন এর চাইতেও উন্নত কিছু প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে ছাতায়। যদিও সেগুলো বিশ্বের সব দেশে পাওয়া যায় না।
বিভিন্ন দেশ তাদের নিজ নিজ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে ছাতাকে আধুনিক করে নিয়েছে। যেমন সাইপ্রাসের কাজব্রেলা ছাতা। বৃষ্টিভেজা ছাতা ভাঁজ করার পর সেটি থেকে টপটপ করে পানি পড়ার সমস্যা থাকবে না এই ছাতায়। কারণ এটি উল্টো করে ভাঁজ করা যায়। এতে ছাতার পানি ছাতার ভেতরেই জমে থাকে। পরে সুবিধাজনক সময়ে সেই পানি ফেলে দেওয়া যাবে।
মরুভূমির দেশগুলোতে মেলে কাফিয়া ছাতা। সেটি খুললেই মাথার উপরে ঝরতে থাকে শিশির বিন্দু। এতে অতি উষ্ণতা থেকে কিছুটা স্বস্তি মেলে। সৌদি আরবের বিজ্ঞানী মোহাম্মদ বিন হামেদ আস সায়েগ এ ধরনের ছাতা আবিষ্কার করেছেন। ছাতাটি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও স্বস্তি দিতে পারবে। এর ওজন প্রায় ৬৬০ গ্রাম। ফলে তা সহজেই বহনযোগ্য।
কাফিয়া ছাতার হাতলের একটি নির্দিষ্ট স্থানে পানির বোতল যুক্ত করা যায়। ছাতার ওপরে থাকে ফ্যান। সেই ফ্যান বোতলের পানি টেনে ছিটিয়ে দেয় ব্যবহারকারীর মাথায়। ফ্যানটি চালাতে ছাতাটিকে চার্জ দিতে হয়। তা ছাড়া তাতে রয়েছে সোলার সিস্টেম।
ট্যারাবেলা নামে এক ধরনের ছাতার সঙ্গে যুক্ত থাকে ব্যারোমিটার। এটি বাইরের আবহাওয়ার তথ্য দিতে পারে। বাতাসের আর্দ্রতা, চাপ সব তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দিতে পারে ছাতাটি। এতে বাতি যুক্ত থাকার কারণে অন্ধকারে হাঁটার সময় আলো পাওয়া যায়।
ছাতা ব্যবহারের সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা হলো ছাতা হারানোর ভয়। তবে উমব্রেলা নামের একটি বিশেষ ছাতা ব্যবহার করলে এ বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যাবে। ছাতাটিকে ভুল করে ফেলে যাওয়ার কোনো উপায়ই নেই। কারণ ফেলে যাওয়ার সময় ছাটাটি ফরগেট মি নট নোটিফিকেশন দেবে।
পাশাপাশি এটি আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। ছাতাটি এতই শক্তভাবে তৈরি যে ঝড়ো বাতাসে তা উল্টে যায় না। তা ছাড়া এ ছাতা মাথায় দিয়ে হাঁটার সময় ফোনে তা নোটিফিকেশন দেবে। কারণ ব্লুটুথ দিয়ে ছাতার সঙ্গে সেন্সর যুক্ত থাকে।
উমব্রেলার মতো আরেকটি ছাতা হলো দাভেক অ্যালার্ট আমব্রেলা। ভুল করে ফেলে যাওয়ার সময় এটিও অ্যালার্ম দেয়। ছাতাটি ছেড়ে মাত্র ৩০ ফুট গেলেই সেই ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোনে নোটিফিকেশন পাঠায়। আমেরিকায় মেলে এ ধরনের ছাতা।
নেদারল্যান্ডসের ডেলফ্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজির বিশেষজ্ঞরা এমন এক ছাতা তৈরি করেছেন যেটি বৃষ্টির তথ্য সরবরাহ করতে পারে। নির্ণয় করতে পারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও। ছাতাটিতে একটি সেন্সর যুক্ত থাকে।
বৃষ্টির ফোঁটা ছাতায় পড়লে যে কম্পন তৈরি হয় তা থেকেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ণয় করতে পারে এটি। এ ছাতার মাধ্যমে শহরের নানা স্থানের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। অতিবৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা থাকলে সেই তথ্যও জানা যায় এই ছাতার মাধ্যমে।