Sunday , November 10 2024
Breaking News

মিরপুরে চাঁদাবাজ মনিরের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ

নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজধানী মিরপুর-১, দারুসসালাম,শাহআলী ও চিড়িয়াখানা রোড এলাকায় মনির বাহিনীর চাঁদাবাজি, দখলবাজি, হুমকি ও অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন  ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা। সম্প্রতি মনির বাহিনীর অন্যায়-অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে ভুক্তভোগী মো. জামাল হোসেন। তিনি বলেন, গত ২০ জুন রাত ৯ টার দিকে আমার হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে আসামী মনির কল করে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন। পরবর্তীতে সে হুমকি দিয়ে আমাকে বলেন মিরপুর এলাকার থাকতে দিবেন না। বিভিন্ন ধারনের ভয়-ভীতি সহ হুমকী দেয়। পরবর্তীতে আমি নিজের নিরপত্তার জন্য ২৮ জুন মিরপুর মডেল থানা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

মিরপুর মডেল থানার এএসআই মুকুল মিয়া বলেন, এ বিষয়ে আমার মনে নেই। কোন মনির হোসেন চিনতে পারছি না। সাধারণ ডায়েরির কপি না দেখলে বলতে পারছি না। কোন মনির হোসেনের কথা বলছেন?

সরেজমিনে দেখা যায় , শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাৎ বাহিনীর সেকেন্ট এন্ড কর্মান্ড মনিরের নেতৃত্বে ডজন খানেক সদস্য নিয়ে শাহাদাৎ এর নামে এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। এর মধ্যে এলাকার নেতা ও তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মাস্তানদের চাঁদা এবং পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়েই ফুটপাথে বসতে হচ্ছে  হকারদের। ওই সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা অমানবিক নির্যাতন চালায় ভুক্তভোগীদের ওপরে। তাদের লালিত-পালিত সম্প্রতি কিছু উঠতি মাস্তানদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে ব্যবসা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সন্ত্রাসীদের নামে থানায় অভিযোগ থাকার সত্বেও  পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা  নিচ্ছে না।

জানা যায়, সম্প্রতি মিরপুর-১ নম্বর, দারুসসালাম ও শাহআলী থানা এলাকায় মনিরের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে এমনই একটি গ্রুপ। ২৫-৩০ জন কিশোরকে দলে ভিড়িয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করেছে। এরাই জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।
যারা ওই এলাকার প্রতিটি ক্ষুদ্র, মাঝারি ব্যবসায়ী ও হকারদের কাছ থেকে দিনহারে চাঁদা আদায় করছে। তাদের টাকা দিতে না চাইলে শুরু হয় হামলা ও নির্যাতন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে দ্বিমুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের। পুলিশ অভিযোগ শুনলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। আর এই সুযোগে সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে নির্যাতন চালাতে শুরু করে।

অভিযোগ করে নুর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, মনিরের এই দলে সাইদুল, হাসান, সিরাজ, বড় সুমন, বাবুসহ ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। এরা প্রত্যেকে এলাকা ভাগ করে চাঁদা আদায় করছে। কেউ দিতে না চাইলে এরা সবাই একসাথে গিয়ে হামলা চালাচ্ছে। চাঁদা না দেয়ায় তার দোকানে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে।

তিনি বলেন, এদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয় না। ফলে সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে যায়। তিনি বলেন, ফুটপাথে সামান্য লাভে পণ্য বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। কিন্তু সেই সামান্য লাভের টাকা থেকে যদিও এভাবে বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে ভাগ দিতে হয় তাহলে আর কিছুই থাকে না। এখন দেখা যাচ্ছে পুঁজি থেকেই চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবী এ সব সন্ত্রাসীদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। তা না হলে আমরা ব্যবসা করতে পারবো না।

চলতি বছরের ১৩ জুন শাহ আলী এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিলন হোসেনের দোকানে হামলা চালায় মনির বাহিনীর সদস্যরা। এই ঘটনায় ২০ জুন  তিনি শাহআলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। মিলন বলেন, রাস্তার পাশে ব্যবসা করতে গেলে কয়েকটি ধাপে চাঁদা ও ঘুষ দিয়েই ব্যবসা করতে হয়। এটা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কিন্তু যখন এর বাইরেও চাঁদা দিতে হয় তখন ব্যবসায়ীদের পুঁজি ভেঙে খাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকে না। তিনি বলেন, ফুটপাথে খুবই কম লাভে পণ্য বিক্রি করতে হয়। এখন প্রচুর দোকান থাকায় খুব বেশি লাভও হয় না। তার মধ্যে থানা, পুলিশ, লাইনম্যান, ঝাড়–দার, সোর্স এবং এলাকার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের আলাদা আলাদা করে টাকা দিতে হয়। কেউ দিন হিসাবে আবার কেউ সপ্তাহ হিসাবে এসব টাকা আদায় করে থাকেন। তার মধ্যে এখন যুক্ত হয়েছে মনির বাহিনী। কিছু কিশোর ও উঠতি বয়সী যুবকদের সাথে নিয়ে প্রতিটি দোকানে চাঁদা দাবি করছে। না দিলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হচ্ছে।

শাহআলী থানায় এসআই মনোয়ার  বলেন, জিডির আসামি ধরার আগে মামলার তদন্তের অনুমতি নিতে হয় কোর্ট থেকে। কোর্টে বাদীকে ডেকেছেন। বাদী যেভাবে অনুমতি পাবেন আমি সেভাবেই ব্যবস্থা নিব।

এছাড়াও

ছাদ থেকে ৬০ পুলিশকে উদ্ধার করে র‍্যাবের হেলিকপ্টার

শেষবার্তা ডেস্ক: রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ৬০ জন পুলিশকে উদ্ধার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *