Related Articles
নিজস্ব প্রতিবেদক : ১১৬ কোটি টাকা অর্থপাচারের অপরাধে ফারইস্ট স্টকস্ অ্যান্ড বন্ডস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (৫ এপ্রিল) মতিঝিল থানায় খালেকসহ বাকিদের নামে এই মামলা করা হয়।
সিআইডির মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ খালেক (৭৫), তরফদার জাহাঙ্গীর আলম (৫০), সাবেক সিইও জাহিদুল হক (৪৪), প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ খালেকের স্ত্রী ও সাবেক সিএফও সাবিহা খালেক (৬২), তার ছেলে শাহরিয়ার খালেদ রুশো (৩৯), মেয়ে শারওয়াত খালেদ (৩৬), জামাতা তানভিরুল হক, মেয়ের শ্বশুর মো. ফজলুল হক (৬৬), আবুল কাশেম মোল্লা (৭৫), রাশেদ মোহাম্মদ মাজহারল (৩৭), খশরুবা সুলতানা শিল্পি (৪৫), শেখ ইউসুফ আলী (৬১), মাহবুবা সুলতানা (৪৯), মিসেস দিলরুবা সুলতানা, নজরুল ইসলাম (৫৭), মিজানুর রহমান মোস্তফা ও কাজী শাহরিয়ার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানিয়েছেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এম এ খালেক ফারইস্ট স্টকস্ অ্যান্ড বন্ডস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পদে থেকে নিজে ও তার আত্মীয়-স্বজনসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্টরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। পরে সম্পদে রূপান্তর ও বিদেশে পাচার করেন তারা।
সিআইডি জানিয়েছে, এম এ খালেক ফারইস্ট স্টকস্ অ্যান্ড বন্ডস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিজ প্রভাব বিস্তার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের টাকা অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় লেয়ারিং করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে মানি লন্ডারিং করেছেন। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হোদাভাসী চৌধুরী অ্যান্ড কোং. এর বিশেষ রিপোর্টে দেখা যায়, ঘটনার সময়কালে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিনিয়োগকারী ৮৯ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯৭ টাকার চেক বা নগদ টাকা জমা করেন। যা বিনিয়োগকারীদের হিসাবে দেখানো হলেও কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি। ভুয়া জমা দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সিআইডি আরও জানিয়েছে, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন সময়ে মোট ১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার চেক জমা করেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে (অপর্যাপ্ত জের, স্বাক্ষরে গড়মিল, টাকার অংক ভুল লেখা ইত্যাদি) চেকগুলো ডিজঅনার হয়। তারা পরস্পর যোগসাজশে কোম্পানির হিসাবে যোগফলে ২২ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ১২৫ এর জায়গায় ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৪১ হাজার ১২৫ বসিয়ে তথ্যের গড়মিল করে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও খালেক দুটি চেকের ৫০ লাখ টাকা তার হিসেবে হস্তান্তর ছাড়াও আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক থেকে ফারইস্ট স্টকস্ অ্যান্ড বন্ডস্ লিমিটেডের নামে নেওয়া ৪১ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে ২০১০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠানের সাবেক সিইও তরফদার জাহাঙ্গীর আলম ও জাকির হোসেন ভূঁইয়াসহ অন্যদের সহযোগিতায় ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং ফেইক ডেপোজিটে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ২৫ কোটি ২০ লাখ টাকা জমা দেখান। কিন্তু তা কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি। এর বিপরীতে তারা বিনিয়োগ ছাড়াই প্রায় সাড়ে ৫০ কোটি টাকা লাভবান হয়েছে।