সাভার প্রতিনিধি: মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে সাভার ও আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৫০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। এঘটনায় সাভার ও আশুলিয়ায় পোশাক কারখানা গুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।সোমবার সকালে সাভারের পদ্মার মোড় ও আশুলিয়ায় পৃথক এ সংঘর্ষের ঘটনা ঞটে।
শিল্প পুলিশ জানায়, সোমবার সকাল আটটার দিকে সাভারের হেমায়েতপুরের পদ্মারমোড় এলাকায় যমুনা গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ না করে ২৩ হাজার টাকা মুজুরীর দাবিতে গার্মেন্টসে বিক্ষোভ করে এবং ভাংচুর চালায়। এসময় পুলিশ ভাংচুরে বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে। এতে দফায় দফায় শ্রমিক ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২০ জন শ্রমিক আহত হন। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
অপরদিকে, সাভারের আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের অন্তত: ৩০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জামগড়া, শিমুলতলা, ছয়তলাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু কারখানায় এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, এনভয় গার্মেন্টসের শ্রমিক নজরুল ইসলাম, ভার্চুয়াল গার্মেন্টসের শ্রমিক সীমা আক্তার, পথচারী বিমল শীল ও মজনু মিয়া। তবে আহত বাকিদের তথ্য দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, সকালে আমরা মজুরি বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর যৌক্তিক দাবিতে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের ছয়তলা এলাকায় আসতে না আসতেই পুলিশ গুলি করতে শুরু করে। আমাদের অনেক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ অনেককেই ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নারী ও শিশু হাসপাতালের জরুরী বিভাগের প্রধান ডা. জয় ভট্টাচার্য বলেন, গুলিবিদ্ধসহ আহত অবস্থায় অন্তত: ২০ জন শ্রমিককে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। এর মধ্যে ৪-৫ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পেয়েছি। আহতদের মধ্য নজরুল ইসলাম নামে এক শ্রমিকের মাথায় গুলি লেগেছে। তাকেসহ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হলে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বেশ কিছু কারখানায় একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাজোয়া যানসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার সকালেও সাভারের হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ায় মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ সদস্যসহ বেশ কিছু শ্রমিক আহত হয়েছেন।