নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বছর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করেছে বিএনপি। প্রতিটি সমাবেশের আগে অঞ্চলভিত্তিক পরিবহন ধর্মঘট দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত রাজধানীতে অনুষ্ঠিত সমাবেশের আগেও একই চিত্র দেখা যেতে পারে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে বুধবার (২৬ জুলাই) রাত থেকেই কার্যত অচল হতে যাচ্ছে দেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ। এতে জনদুর্ভোগ বাড়তে পারে বলে মনে করেন যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে যেসব ধর্মঘট সাম্প্রতিক সময়ে হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিকভাবে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।
শ্রম আইন কিংবা সড়ক পরিবহন আইনে পরিবহন মালিকদের ধর্মঘট ডাকার কোনো বিধান নেই। পরিবহন মালিক চাইলে তার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের যথাযথ পাওনা পরিশোধ করার নিয়ম রয়েছে।
অন্যদিকে শ্রম আইনে দাবি-দাওয়া আদায়ে শ্রমিকদের ধর্মঘট ডাকার সুযোগ আছে। তবে দাবিগুলো অন্তত ১৫ দিন আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করার বিধান রয়েছে।
জনভোগান্তি প্রসঙ্গে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক কারণে যানবাহন বন্ধ হলে, জনভোগান্তি তৈরি হবে, এটাই স্বাভাবিক। এ কাজটি করা কোনোভাবেই ঠিক নয়। অতীতে দেখেছি এসব কর্মসূচির কারণে জরুরি রোগী পরিবহনও সম্ভব হয়নি। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অন্তত ২০টি বাস, লঞ্চ মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে বাস ও লঞ্চ বন্ধে কেন্দ্রীয় মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে এই কর্মসূচিতে ব্যাপক লোক সমাগম হলে একদফা দাবি পূরণে বিএনপি স্থায়ীভাবে বসে যেতে পারে, এমন শঙ্কা নিয়ে আলোচনা বিস্তর। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বুধবার বিকেল থেকেই বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকতে পারে।
বিএনপির কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে একই দিন পাল্টা সমাবেশ ডেকেছে যুবলীগসহ তিনটি সহযোগী সংগঠন। এই কর্মসূচিতে রাজধানীর আশপাশের নেতাকর্মীরা তাহলে কীভাবে অংশ নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাস ও লঞ্চমালিক সমিতির একাধিক নেতা জানান, ক্ষমতাসীনদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে এরই মধ্যে বাস, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন বুকিং দেওয়া হয়েছে। তারা এসব পরিবহনে সমাবেশে অংশ নেবেন।