দুই বাংলার জনপ্রিয় লেখিকা শাম্মী তুলতুলের ঈদ ভাবনা।
শাম্মী তুলতুল ,একজন জনপ্রিয় সাহিত্যিক।একাধারে একজন লেখক, ঔপন্যাসিক, শিশুসাহিত্যিক ,আবৃত্তিকার,রেডিও অনুষ্ঠান পরিচালক, নজরুল অনুরাগী ও দাবা খেলোয়াড়। তার লিখায় থাকে সব সময় এক ধরনের ম্যাসেজ।আছে সমাজ এবং সমাজ সচেতন করার এক প্রকার শক্তি।খুব অল্প বয়সেই তিনি দেশ ও দেশের বাইরে তার লেখনি দিয়ে জয় করছেন অজশ্র মানুষের ভালোবাসা। একটা সাহিত্য সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, উচ্চশিক্ষিত,অভিজাত ,রক্ষণশীল ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। তাই লেখালেখি তার রক্তে, মুক্তিযুদ্ধ তার চেতনায়।বাবা আলহাজ আবু মোহাম্মদ খালেদ শিক্ষাবিদ, মুক্তিযোদ্ধা। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। দাদা আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা, লেখক, কবি নজরুলের বালকবন্ধু ছিলেন।
নিজের ইচ্ছাশক্তির বলে ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির হাতেখড়ি।সেই থেকে একযুগের চাইতেও বেশি সময় ধরে বছর ধরে প্রথম আলো , সমকাল, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, ইত্তেফাক,বাংলাদেশ প্রতিদিন , শিশু, যুগান্তর নবারুণ, আজাদী,পূর্বকোণ সহ দেশের আঞ্চলিক,জাতীয় দৈনিক,মাসিক ও দেশের বাইরে ভারত , জার্মানি। অস্ট্রেলিয়া,সিঙ্গাপুর, ভিবিন্ন পত্র –পত্রিকায় শীর্ষে আছেন। এই পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশ মিলিয়ে বইয়ের সংখ্যা ১৬ টি। ২০২২ কলকাতা বই মেলায় তার বই প্রকাশিত হয় “নরকে আলিঙ্গন” গল্পের বই।
স্বরচিত ছড়া পাঠ করে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন শিশু বয়সেই। এরপর পিচ্চি থেকেই নিজের নাম ছাপার অক্ষরে বড় করে দেখেন পত্রিকার পাতায়।সেই থেকে কাগজ- কলমের পিছু ছাড়ে কে।
একে একে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস চোরাবালির বাসিন্দা, বাল্যবিবাহের ওপর লিখিত উপন্যাস পদ্মবু, এইডসের ওপর লিখিত প্রেমের উপন্যাস মনজুয়াড়ি এই বইগুলো যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়ে বেস্ট সেলার হয়েছে। ।
শিশু-কিশোরদের বই টুনটুনির পাখিস্কুল,নানটু- ঝানটুর বক্স রহস্য,পিঁপড়ে ও হাতির যুদ্ধ,গণিত মামার চামচ রহস্য, দৈত্য হবে রাজা ,কচ্ছপরাজার রাজপ্রাসাদ,একজন কুদ্দুস ও কবি নজরুল, চাঁদে বেড়ানোর পাসপোর্ট এই বইগুলো দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন শিশু হৃদয়ে।বইগুলো হয়েছে বেস্ট সেলার। শিশু- কিশোরদের বইতে সে সব সময় ইতিহাস তুলে ধরেন।যাতে বাচ্চারা ইতিহাস আয়ত্ত করতে পারে।
তিনি আসন্ন ঈদ সম্পর্কে বলেন, ঈদের সময় আমি বিশেষ করে ঘরেই সময় দেয় বেশি। আমার পরিবারের সাথে সময় কাঁটায় । মেহমান আসে প্রচুর তাদের নিয়ে বিজি থাকি। রান্না করি, গরীব দুঃখীদের খাওয়াই। টিভি দেখি। আর তিনদিন পর গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যায়।
ঈদে কেমন জামা নির্বাচন করেন জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, আমি সব সময় দেশীয় পোশাক পরে থাকি। জামদানি ,তাতের কাপড় এগুলো আমাদের পারিবারিক প্রাচীন ঐতিহ্য। মা, নানীরা পরে এসেছেন। এর বাইরেও অন্যান্য জামা পরার চেষ্টা করি।
ট্রেন্ড ফলো করেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি কোন ট্রেন্ড ফলো করিনা আমাকে যা মানায় তাই পরি।
সম্প্রতি ২২মার্চ একটি ম্যাগাজিনে বেগম রোকেয়া চরিত্রে কাভার মডেল হয়ে একজন লেখক রোল মডেল হলেন এই সম্পর্কে বলুন,
দেখুন এটি এমন একটি বিষয় যা সবার ভাগ্যে জুটে না।আমি খুব আনন্দিত আর ভাগ্যবান।নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া চরিত্রে নারী ভুবন ম্যাগাজিনের কাভার মডেল হলাম এটি একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।এটা একজন লেখকের জন্য বড় প্রাপ্তি। কৃতজ্ঞতা জানাই ,তসলিম হাসান ভাইয়া আর আফরোজা আপুকে।
সামনে আর কি কি পরিকল্পনা আছে?
লিখালিখি করে যাব পত্র পত্রিকায়। আর আমার নতুন বইয়ের কাজ চলছে ইনশাল্লাহ শেষ হলেই সবাই জানবে। তুলতুল বলেন, প্রতিটি গল্প উপন্যাসে সে একটি করে ম্যাসেজ রাখেন। যাতে হাস্যরসের সাথে সাথে সবাই শিক্ষণীয় বিষয়ও মাথায় রাখতে পারে। সাহিত্য শুধু বিনোদন নয়,শেখার -জানার বিষয়ও হতে হবে। অদম্য আর একটি সুন্দর বাস্তব স্বপ্নের কর্তা হতে চান তিনি। লেখনি দিয়ে বিশ্বে লাল- সবুজের বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চান শাম্মী তুলতুল।
উল্লেখ্য যে, তুলতুল লেখালেখি অবদানের জন্য পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস চোরাবালির বাসিন্দার জন্য কবি পরিষদ সাহিত্য সন্মাননা। পেয়েছেন বেগম রোকেয়া- সুফিয়া কামাল সাহিত্য পুরস্কার, কবি নজরুল অগ্নিবীণা সাহিত্য পুরস্কার, রোটারিয়ান পুরস্কার,এস বি এস পি সাহিত্য সন্মাননা, নারী দিবস সম্মাননা। দেশ্চিন্তা সম্মাননা, সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকা সম্মাননা, ইঞ্জিনিয়ার খালেক সন্মাননা। কথাসাহিত্যে মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড, সাউথ এশিয়া গোল্ডেন পিস এওয়ার্ড, একমাত্র মহাত্মা গান্ধী গবেষণা সংস্থা থেকে মহাত্মা গান্ধী এওয়ার্ড সহ আরও অন্যান্য পুরস্কার। ২০২০ এ পেয়েছেন জলকথা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পুরস্কার। সম্প্রতি ভারত থেকে পেয়েছেন,দাদা সাহেব ফালকে এওয়ার্ড (ভারত), মহাবঙ্গ সাহিত্য পুরুস্কার হিসেবে মেডেল (ভারত)।