শেষ বার্তা ডেস্ক :
আজ জানা যাবে দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন । রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে নাম চূড়ান্ত হবে। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে দলের নেতাদের কাছে নাম জানতে চাইতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার পছন্দের প্রার্থীর নাম তুলে ধরতে পারেন। এরপর মতামত চাইবেন দলীয় এমপিদের কাছে। পরে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ প্রক্রিয়ায় পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্ধারণ করতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। চাইলে দলীয় সভাপতি একক পছন্দের ব্যক্তিকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে চূড়ান্ত করতে পারতেন।
এ জন্য এমপিদের আলাদাভাবে নির্দেশনা দেবেন শেখ হাসিনা। তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রেসিডেন্ট পদ। কারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের ভূমিকাটাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এজন্য সবদিক বিবেচনা করে ওই পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ থেকে প্রেসিডেন্ট পদে কাকে সমর্থন দেয়া হবে, এ নিয়ে দলীয় কোনো ফোরামেই আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেছেন দলটির একাধিক প্রভাবশালী নেতা। তারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন নামের কথা শোনা গেলেও তার কোনো ভিত্তি নেই। সংসদীয় দলের বৈঠকেই তা চূড়ান্ত করা হবে।
ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ই ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে আগ্রহী প্রার্থীদের। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা প্রেসিডেন্ট পদে ভোট দিবেন। আর প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হন সংসদ সদস্যরা। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবে না বলে এরই মধ্যে জানিয়েছে। আর সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। তাই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার পাশাপাশি প্রস্তাবক ও সমর্থক কারা হবেন, সেটাও চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। দলটির নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এখনো নিজের পছন্দের কথা প্রকাশ করেননি।
এ জন্য দলের নেতারা নানা নাম নিয়ে আলোচনা করছেন। ১৯৯১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি।
স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন। সেই হিসাবে নতুন প্রেসিডেন্ট হবেন এই পদে অষ্টাদশ ব্যক্তি। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আগামী ২৪শে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে।
১৯শে ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরদিন ১৩ই ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে। একাধিক প্রার্থী থাকলে ১৯শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ভোটগ্রহণ হবে। সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন।