মেহেরপুর প্রতিনিধি: এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে,আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী বলে মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই বারের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এক মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন সাধারণ মানুষ।
অডিও ক্লিপে ডা. অলোক কুমার দাসকে উদ্দেশ্য করে প্রফেসর আব্দুল মান্নানকে বলতে শোনা যায়, আমি প্রফেসর মান্নান বলছি। তুমি তো ডা. অলোক কুমার দাস। বাইরে থেকে মেহেরপুরে এসে ভালোই আছ। খুব আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করছ। বাড়িঘর সবই তৈরি করেছ। টাকাপয়সা অনেক কামাই করেছ। আমি কিন্তু যেমন ভালো লোক তেমন খারাপও। তোমাকে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রমোশন দেয়নি। সরকার তোমার প্রমোশন দিয়েছে।
প্রফেসর আব্দুল মান্নান আরও বলেন, মন্ত্রীকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আর একটা কথা শুনি, আমি এমপি হই আর না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। আর তুমি যদি সাবধান হয়ে যাও, তাহলে আমার স্নেহদৃষ্টি তোমার ওপর থাকবে। এটুকু আমি তোমাকে বললাম, তুমি পারলে তোমার মন্ত্রীকে বলো। আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি। সাবধান হয়ে যাও তুমি। আমি তোমার কোনো কথা শুনব না। আমি যে রিপোর্ট পেয়েছি, আমি খুব অসন্তুষ্ট তোমার প্রতি, তুমি সাবধান হয়ে যাও।
এ বিষয়ে অলোক কুমার দাশ বলেন, গেল ১৭ ডিসেম্বর প্রফেসর আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে আমার ফোনে একটি ফোন আসে। ফোনে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। তবে এটি সাধারণ বিষয় বলে আমি মনে করি। বিষয়টি আমার ফোনে অটো কল রেকর্ড হয়ে যায়। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তিতে থাকতে চাই। এখন এটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এসব নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসান অডিওটি মেহেরপুরের দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির এই শাখার সভাপতি মো. কবির হোসেনকে দিয়েছেন।
হুমকির বিষয়ে প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। অথচ ডা. অলোক কুমার দাস সব সময় প্রতিমন্ত্রীর বাসায় থাকছেন। এ কারণে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি মুঠোফোনে। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য কেউ এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেটি করেছেন তা নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন। উনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হয়ে এটি বলতে পারেন না। আর উনি যে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছেন, তা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেব।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর আমরা নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিকে জানিয়েছি। পরবর্তীকালে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।