নিজস্ব প্রতিনিধি: বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যকর দা দিয়ে কুপিয়ে আরিফ জমাদ্দারকে নৃশংসভাবে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক প্রধান আসামি আবুল কাশেম ফরাজীকে হত্যাকান্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)। রাজধানীর কোতয়ালী থানার সদরঘাট এলাকা থেকে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪ টায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মো. ফরিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকান্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি দল হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি দল ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যকর আরিফ জমদ্দারকে দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক প্রধান আসামি মোঃ আবুল কাশেম ফরাজী (৬৭) গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে ভিত্তিতে তিনি জানান,আসামি ওই হত্যাকান্ডের সাথে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
র্যাব জানায়,বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন চর ডাইয়া এলাকায় বসবাসকারী পেশায় মুদি দোকান্দার ভিকটিম আরিফ জমাদ্দার সাথে গ্রেফতারকৃত আসামি আবুল কাশেম ফরাজীর পূর্ব হতে পারিবারিকভাবে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেমসহ ১৬-১৭ জন মিলে আরিফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল সোমবার দুপুর ২ টার দিকে ঘটিকায় আরিফ দুপুরে খাবার খেয়ে ও যোহরের নামাজ পড়ে উল্লেখিত মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন চর ডাইয়া এলাকার মসজিদের পাশে তার পরিচালিত মুদি দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা করে। অতঃপর তার দোকানে গিয়ে দোকান সাটার খোলে দোকানে বসার সাথে সাথেই আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আবুল কাশেম ও তার আরো ১৬-১৭ সহযোগীরা মিলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (দা, লোহার রড ও লাঠিসোটা ইত্যাদি) নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আরিফের উপর অতর্কিত আক্রমন করে। অতঃপর প্রথমে গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম তার হাতে থাকা দা দিয়ে আরিফের মাথায় একাধিক কোপ দেয়। পরবর্তীতে আবুল কাশেমসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা তাদের কাছে থাকা দা দিয়ে আরিফের হাত,পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারিভাবে কুপাতে থাকে ও লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকে। যার ফলে আরিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং গুরুতর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়। আরিফের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আরিফের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় আরিফকে গুরুতর রক্তাক্ত আহত অবস্থায় স্পীড বোড যোগে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে গতকাল সোমবার আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫ টায় আরিফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।