জাবি প্রতিনিধি:
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। স্থায়ীত্বের লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
দ্বিতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল নয়টায় অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা। পরে বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির সহ অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে কর্মচারীদের সাথে কথা বলতে আসেন।
এসময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির কর্মচারীদের দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে বলেন, তোমরা আমাদের একটু সময় দাও। কে কোন পোস্টে কাজ করো ও শিক্ষাগত যোগ্যতা কি তা আমাদের কাছে সরবরাহ করো। আমরা ইউজিসিতে যাই। আশা করি একটি ব্যবস্থা হবে। আর তোমাদের প্রতিনিধি পাঠাও। আমরা তাদের সাথে কথা বলি।
এদিকে সাবেক উপাচার্য আশ্বাস দিলেও ধর্মঘট বন্ধ করেননি কর্মচারীরা। উপাচার্য সহ অন্যান্য শিক্ষকরা ধর্মঘট স্থান ত্যাগ করলে তারা পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। তারা বলছেন, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্বারকলিপি প্রদান করেছেন এবং একই দাবিতে মানববন্ধন করেন। সে সময় তাদের চাকরি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার। তাতেও কোন কাজ হয়নি। এছাড়া চলতি বছরের ২ জানুয়ারি আমরণ অনশনে বসলে প্রশাসন ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেয়। তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও তার কোন বাস্তবায়ন হয়নি।
কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, যাদের লোক আছে তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কোষাধ্যক্ষের স্বামীর গাড়িচালকের স্ত্রীকে পিয়ন পদে নিয়োগের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি। অথচ আমাদের বেলায় এখন যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা হলের হল এটেন্ডেন্ট তামান্না জাহান বলেন, ‘আমি দশ ধরে দৈনিক মজুরিতে কাজ করছি। নতুন হলগুলোতে লোক নিচ্ছে। সেখানে আমি কয়েকটি পদে আবেদন করেছি। পিয়ন ডিগ্রী পাস করা সত্ত্বেও আমাকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি, অথচ এস এস সি পাশ করেছে এমন একজনকে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্যাররা বলছেন শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে অথচ তা হচ্ছে না। যাদের লোকজন আছে তারাই নিয়োগ পাচ্ছে।
বেগম সুফিয়া কামাল হলের নিরাপত্তা প্রহরী শামসুল আলম বলেন, ‘২৭ তারিখ ইউজিসির সাথে তারা মিটিং করবে। আমাদেরকে ছয় মাসের ভিতরে এটা সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছে। আমরা এই আশ্বাস মানিনা। এটা লিখিত আশ্বাস চেয়েছি কিন্তু তারা মৌখিক আশ্বাস দিয়েছে। তাই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।