স্বাস্থ্য বার্তা ডেস্ক :
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর রাখার পাশাপাশি দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষার প্রয়োজন হয় ভিটামিন ‘ডি’। তাই একে বলা হয় পুষ্টির পাওয়ার হাউস। এই ভিটামিনের অভাবে ক্লান্তি, অবসাদ, খিটখিটে মেজাজ, বিষণ্নতাসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। কীভাবে কোথায় পাবেন ভিটামিন ‘ডি’, এভারকেয়ার হাসপাতালের পুষ্টিবিদ আশফি মোহাম্মদ-এর সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন ইসরাত জেবিন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র চাহিদা বাড়তে থাকে। জন্মের পর থেকে এক বছর পর্যন্ত শিশুদের দৈনিক ৪০০ ইউনিট ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। ১ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত সেই চাহিদা ৬০০ ইউনিট হয়ে যায়। বয়স ৫০-এর পর হাড় ভঙ্গুর হতে থাকে। তাই এ বয়সে ভিটামিন ‘ডি’র চাহিদা বেড়ে ৮০০ ইউনিট হয়।
শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ‘ডি’, যা হাড় ও দাঁতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। বিষণ্নতার ঝুঁকি হ্রাস করে এবং শরীরকে উদ্দমী করে তোলে। সাম্প্রতিক কভিড মহামারিতে দেখা গেছে, যাদের শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ডি’ আছে তাদের করোনাভাইরাস খুব কম ক্ষতিগ্রস্ত করতে পেরেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভিটামিন ‘ডি’ হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করে এবং অন্য যে কোনো রোগের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে পারে। এমনকি শরীরের ক্যান্সারকে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ২০১৯ সালের মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ক্যান্সার সারাতে না পারলেও ভিটামিন ‘ডি’ ক্যান্সারের মৃত্যুকে উল্লেখযোগ্যভাবে ১৩ শতাংশ কমিয়েছে।
অন্যসব ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান আমরা খাবার থেকে পেলেও ভিটামিন ‘ডি’ খাবার থেকে খুব সামান্যই পাওয়া যায়। সূর্যের আলো বিশেষ করে সকালের সূর্যের আলো ভিটামিন ‘ডি’র অন্যতম উৎস। সকাল ৮-১০টার মধ্যে মাত্র ১৫-২০ মিনিট রোদে দাঁড়ালে ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ‘ডি’র বেশিরভাগই আমাদের শরীর শোষণ করতে পারে সূর্যের আলো থেকে। দুপুরের রোদে ভিটামিন ‘ডি’ থাকলেও সেই সময় অতি বেগুনি রশ্মিরপ্রভাবে ত্বকের ক্যান্সারসহ নানা সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সকালের রোদের কোনো বিকল্প নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, ঠান্ডা দেশে বসবাসকারীদের তুলনায় গরম ও বেশি রৌদ্জ্জ্ল দেশে বসবাসকারীরা কম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
ভিটামিন ‘ডি’র সর্বোত্তম খাবারের উৎস হলো সামুদ্রিক মাছের তেল। যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল মাছ এবং মাছের লিভার অয়েল। এ তেল ওষুধের দোকানে কড লিভার অয়েল নামে কিনতে পাওয়া যায়। নিয়মিত একটি করে কড লিভার অয়েল খেলে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে। এ ছাড়া দুধ, ডিম ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন দই, পনির থেকে খানিকটা ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।