শেষবার্তা ডেস্ক : মোটর চালিত অটোরিকশা চলার দাবিতে রোববার মিরপুরে দিনভর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের রাস্তা অবরোধ, পরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, দফায় দফায় বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর পুলিশ বক্সে আগুন পুলিশের উপরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব অভিযোগে আন্দোলনরত অটো রিকশা চালকদের বিরুদ্ধে তিন থানায় চারটি মামলা হয়েছে। পল্লবী থানায় দুটি, কামরুল থানায় একটি ও মিরপুর মডেল থানা একটি মামলার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা।
তিনি বলেন, রোববার দিবাগত রাতে মিরপুরের পল্লবী থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়। একটি মামলা পল্লবী থানা পুলিশ ও আরেকটি মামলা পল্লবী ট্রাফিক জোন থেকে দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে কাফরুল থানা ও মিরপুর মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে। গতকাল দিনভর আন্দোলন অবরোধের নামে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় দেড় হাজারের বেশি অটো রিকশা চালকদের। এসব মামলায় চার থানায় পৃথক অভিযানে বেশ কয়েকজন অটো রিকশা চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, রোববার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় তান্ডব চালায় অটোরিক্সা চালকরা। তারা নিচে রাস্তাসহ কালশী ফ্লাইওভার অবরোধ করে রাখে। এক পর্যায়ে তারা বিকেলের দিকে কালশীর রাস্তা অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক বাসে ভাঙচুর করেন। এছাড়া সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।
যে বা যারা পুলিশের উপর হামলা করেছে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার চেষ্টা করেছে ডায় র করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
পল্লবী থানায় করা দুটি মামলার নথি দেখা গেছে, পল্লবী থানার পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদী এসআই মোহাম্মদ আলী। দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনী জনতাবন্ধে দাঙ্গা সৃষ্টি, সরকারী কর্তব্য কাজে বাঁধাদানসহ পুলিশের উপর আক্রমন ও অপরাধমূলক বল প্রয়োগে সাধারণ ও গুরুতর জখম, ভাংচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধন, বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটানো এবং বিস্ফোরক দ্রব্য হেফাজতে রাখা ও সহায়তা করার অপরাধ। মামলায় ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
মামলায় উল্লেখিত অপরাধ কাজের জড়িত থাকা অভিযোগে ২২ জনের নাম উল্লেখ করেআসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে।
অন্যদিকে একই থানায় ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিম এর পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদি সার্জেন্ট মিন্টু চন্দ্র দে। অন্য মামলার ন্যায় মামলাতেও একে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতি হয়েছে ৫ লাখ টাকা। মামলায় আসামী করা হয়েছে অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে।
পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, পল্লবী থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ১৫ অটো রিক্সা চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাউ উল্লেখিত ও অজ্ঞাত পলাতক আসামীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মুন্সির সাব্বির আহমেদ বলেন, দায়ের করা মামলা এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধার সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম জানান, কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় ৬০০/৭০০ জন অজ্ঞাতকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ১২ জন। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা, ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত।
এর আগে, রোববার (১৯ মে) সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর-১, মিরপুর-১০ ও আগারগাঁও এলাকার সড়কের একাধিক স্থানে অবস্থান নেন চালকরা। পরে দুপুর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় তাণ্ডব চালায় অটোরিকশা চালকরা। একপর্যায়ে তারা বিকেলের দিকে কালশী মোড়ে অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক বাসে ভাঙচুর করেন। এছাড়া, সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।