শেষবার্তা ডেস্ক : কোটা আন্দোলনে বিএনপি জামাত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ওয়ান ইলেভেনের কুশীলকরা এখনো সক্রিয় আছে। ওয়ান ইলেভেনের কুশীলকের মানে হচ্ছে যারা ষড়যন্ত্রকারী। এটি মানুষ বুঝে। এই ওয়ান ইলেভেনের কুশীলকরা এখনো সক্রিয়। তারা নির্বাচনের আগে সক্রিয় ছিল। বিএনপি জামাতের সাথে যুক্ত হয়ে দেশের নির্বাচন পন্ড করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। নির্বাচনের পরে সরকার যেন বিশ্ব ব্যাংকের গ্রহণযোগ্য না হয়,সে জন্য সক্রিয় ছিল। সেই দুই চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা সক্রিয় হয়েছে দেশে একটি গন্ডগোল পাকানোর জন্য। বিএনপি জামাতের যেমন আন্দোলন করার কোন ক্ষমতা নাই। ওয়ান ইলেভেনের কুশীলকদের জনগণের কাছে যাওয়ার কোন ক্ষমতা নাই। তারা জনগণ থেকে যোজন যোজন দূরে। কিন্তু তারা সবসময় কামনা করে দেশে একটি পরিস্থিতি তৈরি হোক তাহলে তারা আরও ভাড়ায় খাটতে পারবে।
কোটা আন্দোলনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা না বুঝেই কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সরকার বাতিল করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে সরকার এটি বাতিল করেছে। গত কয়েকটি বিসিএস পরীক্ষা কোটাবিহীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবং সরকারি চাকরিতে কোটার ভিত্তিতে নয়, সম্পূর্ণ কোটা বিহীনভাবে সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই কোটা ছিল। স্বাধীনতার আগেও কোটা ছিল। ক্ষুদ্র নীর গোষ্ঠী, নারী ও জেলা কোটা ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল না। যেটি আমাদের সরকার পূর্ণবহাল করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের কোটা দেশ স্বাধীনের পর থেকে ছিল। যেহেতু কোটা সরকার বাতিল করেছিল, দেশের যে কোন নাগরিক আদালতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। সে কারণে এক জন ব্যক্তি আদালতে, হাইকোর্টে গিয়েছিল। হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সে টি অবৈধ বলে রায় দিয়েছিল। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, কোটা পূর্ণবহালের কথা বলেছেন। হাইকোর্ট রায় দিল সরকারের বিরুদ্ধে। আর আন্দোলন করছে সরকারের বিরুদ্ধে। আজব, অদ্ভুত। হাইকোর্টের এই রায় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে। অর্থাৎ সরকার যে কোঠ বাদ করে দিয়ে ছিল, হাইকোর্ট সেই রায় পূর্ণবহাল করেছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী কোটা নাই। কোটার ভিত্তিতে চাকরি হবে না সেই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এটি জানার পরও যারা আন্দোলন করছে দুর্ভসন্ধি জনক ভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে সেখানে সম্পৃক্ত করছে। এর পর সে খানে বিএনপি-জামাত ঢুকেছে। কোটা আন্দোলনে বিএনপি জামাত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, গতকাল সারাদেশে যে নৈরাজ্য হয়েছে এর প্রধান কারণ হচ্ছে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা, ঢাকা-চট্টগ্রাম রংপুরসহ সমগ্র দেশে তারা লাঠি সোটা আগ্নেয় অস্ত্র নিয়ে নেমেছে। চট্টগ্রামে মানুষের রগ কেটেছে। রক্তটা বাহিনী হচ্ছে শিবির। চট্টগ্রামে ছয় তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদেরকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সে খানে তারা আগ্নেয়শ্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। চট্টগ্রামে তিনজন নিহত হয়েছে। সেকানে একজন সাধারণ ছাত্রী, একজন সাধারণ ছাত্র ও একজন ছাত্রদলের নেতা। ছাত্রদলের নেতা ওখানে গেল কেন? তাহলে তারা ওখানে ঢুকেছে প্রমাণ হল। ঢাকায় একজন পথচারী ও আরেকজন ছাত্র নিহত হয়েছে। অর্থাৎ গতকাল বিএনপি-জামাত চাচ্ছিল, দেশে কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে লাশ তৈরি হোক। এবং তারা গতকাল এই লাশগুলো তৈরি করেছে। তাদের (বিএনপি-জামাত) উদ্দেশ্য ছিল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার। একারণে লাশ তৈরি করেছে। কোটা আন্দোলনকারীরা গতকাল সমাবেশ করেও কোন কর্মসূচি দেয় নাই। রাত সাড়ে বারোটায় কর্মসূচি ঘোষণা, গাইবে না জানাজ ও মিছিল। তারমানে লাশের রাজনীতি। এরা মানে, এই কর্মসূচি কোটা আন্দোলনকারীদের নয়। এই কর্মসূচি বিএনপি-জামাতের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা বিএনপির জামাতের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। আমরা দেশকে বিএনপি জামাতের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে প্রস্থিতিশীল করতে দিবো না।