রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ পোশাক-কর্মী নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৩ জন। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও যেকোনো সময় ফের জ্বলে উঠতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রূপনগরে ওই রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগে। বিকট শব্দে ১০ থেকে ১৫টি বিস্ফোরণে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিপরীত পাশের পোশাক কারখানায়।
উদ্ধারে এগিয়ে আসে পাশের বিইউবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। আগুন লাগার ১৬ মিনিট পর ৫টি ইউনিট নিয়ে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। দুপুর ১টা নাগাদ যোগ দেয় আরও ৪টি ইউনিট। ধাপে ধাপে যোগ দেয় ১২টি ইউনিট।
পরে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, বিএনসিসির সদস্যদের চেষ্টায় ৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে পোশাক কারখানার আগুন।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, রাসায়নিকের গুদামে আগুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন মালিক।
যা বললেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, মিরপুরে রাসায়নিক গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও, যেকোনো সময় আবার জ্বলে উঠতে পারে। এটি পুরোপুরি নিভেছে—এমনটা বলা যাবে না। বুধবার সকালে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য বুয়েটের একটি দল ঘটনাস্থলে যাবে।
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের এই আগুনের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। আমরা এই শোকের সময়ে তাদের পরিবারের পাশে আছি।’
ড. ইউনূস অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় সহায়তার নির্দেশ দেন।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢামেকে ১৬ মরদেহ
আগুনে নিহত ১৬ জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বুধবার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, নিহতের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী।