শেষবার্তা ডেস্ক : রাজধানীর গুলিস্তান এলাকা থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাই, আইএমইআই পরিবর্তন ও চোরাই মোবাইল বিক্রি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০৫টি চোরাই মোবাইল ও আইএমইআই পরিবর্তনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে ডিবি। গ্রেফতাররা হলেন- আব্দুল মোতালেব (৩৪), মাজহারুল ইসলাম অনিক (২৮), মো. মাহবুব (২৯) ও মো. তারেক জামিল সিয়াম (২৪)।
ডিবি বলছে, আইএমইআই পরিবর্তন করা মোবাইলগুলো গ্রেফতার আব্দুল মোতালেব ও মাজহারুল ইসলাম অনিক গুলিস্তান এবং ওসমানী উদ্যান এলাকায় গোপনে সংরক্ষণ করতেন। এমনকি অভিযানকালে ওসমানী উদ্যানে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক টয়লেটের ড্রয়ার থেকে প্রায় ৪৬টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১৫ জুলাই) মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় কয়েকটি চক্র মোবাইল ছিনতাই করে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে আসছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রাতে গোয়েন্দা তেজগাঁ বিভাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম গোলাপশাহ মাজার মসজিদ এলাকা ও ওসমানী উদ্যান কেন্দ্রিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার ও ১০৫টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার আব্দুল মোতালেব ও মাজহারুল ইসলাম অনিক ছিনতাইকারীদের মদদদাতা। তাদের অধীনে তারেক জামিল সিয়াম ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে মোবাইল সংগ্রহ করে থাকে। চোরাই মোবাইলগুলো সংগ্রহ করে গুলিস্তানস্থ পাতাল মার্কেটে গ্রেফতার তারেক জামিল সিয়ামের মোবাইল দোকানে মোবাইল ফ্ল্যাশ দিয়ে আইএমইআই পরিবর্তন করে আব্দুল মোতালেব ও মাজহারুল ইসলাম অনিকদের কাছে সরবরাহ করে।
আইএমইআই পরিবর্তনের ফলে পুলিশ আর মোবাইল গুলো খুঁজে পায় না।
মোবাইলগুলো গ্রেফতার মাহবুবের মাধ্যমে গোলাপশাহ মাজার মসজিদ এলাকা ও ওসমানী উদ্যান এলাকার ফুটপাতের উপরে ভ্রাম্যমান দোকান এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজনের কাছে কম টাকায় বিক্রি করে।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, চক্রটির কাছ থেকে ১০৫টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মোবাইলের বেশিরভাগ আইএমইআই পরিবর্তন করেছে চক্রটি। এই চক্রটিতে আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে। তাদের ধরতেও অভিযান চললাম।
তিনি বলেন, আইএমইআই পরিবর্তন করা মোবাইলগুলো ওসমানী উদ্যানে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক টয়লেটের ড্রয়ার রাখতো চক্রের সদস্যরা। যারা মোবাইলের ক্রেতা ছিলেন তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বলা হতো পাবলিক টয়লেটের ড্রয়ারে রাখা আছে। ক্রেতারা পাবলিক টয়লেটের ড্রয়ার থেকে কাঙ্ক্ষিত মোবাইল আনতেন। এর সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক টয়লেট যারা টেন্ডার পেয়েছে তারাও জড়িত।
ডিবিপ্রধান জানান, আইএমইআই পরিবর্তন করতে পারেনি এমন কিছু মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ১৪টি মোবাইলের আসল মালিক ইতোমধ্যে খুঁজে পাওয়া গেছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মোবাইলগুলো কুমিল্লা, নওগাঁ ও বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন সময় ছিনতাই হয়েছে। প্রকৃত মালিককে তাদের মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে।