Sunday , June 15 2025
Breaking News

সংযোগ কেটে দিয়ে ডিস মেকানিক সেজে বাসা রেকি, তারপর ডাকাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা

ডাকাতির জন্য বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে ঘুরে বাড়ি টার্গেট করে বিদেশি পিস্তল, বিদেশি রিভলবার, বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে করতেন ডাকাতি। দীর্ঘদিন যাবৎ লুটপাট, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা এমন ১০ জনের ডাকাত দল রাজধানীর ডেমরা, শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় বড় ধরনের ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে আসছে। গত ৫ মাসে নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাতটি ডাকাতি করেছে চক্রটি।

সোমবার (৮ মে) রাজধানীর ডেমরা থানাধীন বাশেরপুল এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত দলটির সরদার মো. উজ্জল হোসেন (৩৩) ও তার অন্যতম সহযোগী মো. রাশেদ (৩৭) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩।

এসময় তাদের কাছ থেকে একটি করে বিদেশি পিস্তল, বিদেশি বিভলবার, ম্যাগাজি, গুলির খালী খোসা, সুইচ গিয়ার, চাপাতি, প্লাস, টর্চ লাইট, স্ক্র ড্রাইভার, হেস্কো ব্লেড, ব্যাগ, দুইটি করে রাউন্ড তাজা গুলি, হাতুড়ি, গামছা, ইলেকট্রিক তার, রশি, মোবাইলফোন, তিনটি করে ককটেল, কস্টেপ এবং ৬ রাউন্ড ব্লাংক কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ডাকাত দলের সর্দার মোঃ উজ্জল হোসেন পুরো দলটি পরিচালনা করে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে উজ্জল ডাকাতের নেতৃত্বে তার দলটি দীর্ঘদিন যাবৎ লুটপাট, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার দলের মোট ১০ জন ডাকাত সদস্য রয়েছে। তারা গত ৫ মাসে নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৭ টি ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আরিফ মহিউদ্দিন জানান, উজ্জল দলের অন্যান্য সহযোগীরা ডাকাতির জন্য বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ করে। তারা বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াত এবং ডাকাতির জন্য পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন বাড়ি টার্গেট করত। পরে তাদের টার্গেট অনুযায়ী বাড়িগুলোতে ডাকাতির জান্য গোপনে প্রস্তুতি গ্রহণ করত এবং বিদেশি পিস্তল, বিদেশি রিভলবার, বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি, বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সর্জিত হয়ে অতর্কিতে হামলা চালাত।

জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ডেমরা এলাকায় সম্প্রতি তারা একটি ৪তলা বাড়িকে টার্গেট করে। বাড়ির মালিক নিলুফা ইয়াসমিন বাড়ির অন্যান্য ফ্লোর ভাড়া দিয়ে ২য় তলায় নিজস্ব একটি ফ্ল্যাটে একা বসবাস করেন। তার স্বামী দীর্ঘদিন যাবৎ একজন প্রবাসী এবং সম্প্রতি তার দুই ছেলে প্রবাসে চলে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবৎ বাড়িটিতে একা বাস করে আসছিল। উজ্জল ও তার দল গত এপ্রিল মাস থেকেই এই বাড়িটি টার্গেট করে। এরপর তারা বেশ কয়েকবার বাড়িটির ডিস সংযোগের তার কেটে দেয় এবং বাসায় নক করে ডিসের মেকানিক পরিচয়ে ডিস সংযোগ ঠিক করার নামে বাসাটি পর্যবেক্ষণ করে। গতকাল বিকেলে অস্ত্র সর্জিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ডাকাত দলের সর্দার উজ্জল হোসেন মূলত ব্যানার, বিলবোর্ড তৈরির ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসের দোকানে কাজ করে। ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা  উজ্জ্বল তার মামার স্টীলের আসবাবপত্র তৈরির কারখানায়ও  দীর্ঘ ৫ বছর কাজ করে। এরপর ছন্নছাড়া জীবনযাপন শুরু করে ছিনতাই, চুরি, মাদকাসক্তির মতো বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। একসময় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে ডাকাত চক্র গড়ে তোলে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ এই ডাকাত চক্রটি নেতৃত্ব দিয়ে‌ আসছে। এছাড়া গ্রেফতার রাশেদ মূলত রং মিস্ত্রির কাজ করে এবং কাজের অজুহাতে বিভিন্ন বাড়িতে পর্যবেক্ষণ চালায় এবং ডাকাতির শেষে স্থান ত্যাগের রাস্তাও ঠিক করে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

এছাড়াও তারা মহাসড়কে রাতে বা নির্জন সময়ে বিভিন্ন গাড়ি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি ও লুটপাট কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। উজ্জ্বল এর নামে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে বিভিন্ন মামলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে জামিনে মুক্তির পর ডাকাতির পেশা বেছে নেয়।

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ভাড়া করা। এছাড়া মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত ছিল ডাকাত উজ্জ্বল। গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এছাড়াও

পহেলা বৈশাখ: বাঙালির প্রাণের উৎসব

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল: আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা ১৪৩২ সালের প্রথম দিন। এই দিনটি শুধু একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *